আমার আম্মারে দেখতে ইচ্ছা করে..


আমজাদের আলোর জীবন 

এখন পুরোটাই অন্ধকার

নোয়াখালির আমজাদ যেন বেঁচে থেকেও মৃত। ছররা গুলি চোখে লেগে হারিয়েছেন দৃষ্টি। হঠাৎ করেই তার আলোর জীবন এখন পুরোটাই অন্ধকার। কিন্তু তার এমন অবস্থা হলো কী করে? পঙ্গু হাসাপাতালের কেবিনে বসে কথা হয় আমজাদের সঙ্গে। জানান, তিনিও গুলি খেয়েছেন গত ৫ই অগাস্ট ঢাকার যাত্রাবাড়িতে।

“তখন দুপুরের পর। যাত্রাবাড়ির ছাদ থেকে গুলি করে। আমার পায়ে গুলি লাগার পর মাটিতে পরে যাই। তখন সবাই পালায় যায়। এই সময় দুইটা পুলিশ আমার কাছে আসে। আমি অনেক কষ্টে হাত তুলে গুলি না করতে অনুরোধ করি। কিন্তু দশ হাত দূর থেকে ওরা আমার চোখ এবং পিঠে ছররা গুলি মারে।”

ছররা গুলি চোখে লাগার কিছুক্ষণ পর থেকেই আমজাদ চোখে ঝাপসা দেখা শুরু করেন। একপর্যায়ে সব অন্ধকার হয়ে আসে তার চোখে। হারিয়ে ফেলেন চোখের আলো।

আর কিছু দেখতে পারছিলাম না। দাঁতে হাত দিয়ে দেখি, গুলিতে দুইটা দাঁত ভেঙ্গে গেছে। রক্ত বের হচ্ছে মুখ দিয়ে।

আমজাদ এরপর ভর্তি হন হাসপাতালে। নোয়াখালি, চট্টগ্রাম হয়ে তার স্থান হয় ঢাকার চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে। সরকারি খরচে চলে চিকিৎসা।

ডান চোখ থেকে ৫টা গুলি বের করছে। আর বাম চোখ থেকে ৪টা বের করলেও এখনও একটা গুলি রয়েই গেছে। কিন্তু আমি দেখতে পারছি না। আমার আম্মারে দেখতে ইচ্ছা করে। কিন্তু কাউকেই দেখতে পারি না। শুধু তাদের কণ্ঠ শুনে অনুভব করেত পারি। কখন রাত হয়, কখন দিন হয় কিছু বুঝতে পারি না। সব অন্ধকার।

আমজাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে এখনও ছররা গুলির অংশবিশেষ আটকে আছে। তবে এতো কিছুর মধ্যেও ভবিষ্যত নিয়ে হতাশ নন তিনি। “এখনতো আমার অবস্থা খারাপ। আমার দুই ভাই বড়। কিন্তু তাদের সংসার আছে। আমার ছোটভাই আর মা’কে নিয়ে আমি এখন কীভাবে চলবো। জানি না ভবিষ্যতে আমার কী হবে!”

সূত্র: বিবিসি বাংলা 


#Tales_Of_July

Post a Comment

Previous Post Next Post