বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় যখন সরকার সকল স্তরের মানুষের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের ওপর নির্মম দমন-পীড়ন শুরু করে তখন তার প্রতিবাদ করতে গিয়ে মোঃ হাবিব (৪৫) শাহাদাত বরণ করেন।
তিনি শহিদ হয়েছেন ঠিকই, কিন্তু চরম বাস্তবতা হল ছয় সদস্যের পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি হাবিবের মৃত্যু তার পরিবারকে চরম আর্থিক সংকটে ফেলে দিয়েছে।
পেশায় প্রাইভেটকার চালক হাবিব রাস্তায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দুর্দশা উপেক্ষা করতে পারেননি। তিনি শনির আখড়া এলাকায় আন্দোলনকারীদের জন্য খিচুড়ি রান্না করতেন।
গত ২০ জুলাই সময় এ কাজ করতে গিয়ে হাবীব পুলিশের গুলিতে শহীদ হন।
হাবীবের বড় মেয়ে ফাতেমা আক্তার (২০) তার বাবার উদারতা সম্পর্কে বলেন, ‘আমার বাবা রাস্তায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি পিতৃস্নেহ অনুভব করেছিলেন। এ কারণে তিনি আমাদের অনুরোধ উপেক্ষা করে তাদের খাওয়ানোর জন্য রাস্তায় চলে যেতেন।’
সেদিন সকালে ফাতেমা তার বাবাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে অনুরোধ করেছিলেন, ‘বাবা, দয়া করে বাইরে যাবে না। রাস্তাঘাটে অনেক ঝামেলা। তুমি ছাড়া আমাদের কেউ নেই। তোমার কিছু হলে আমরা বাঁচব কী করে?’
ফাতেমা অশ্রুরূদ্ধ কন্ঠে বলেন, ‘আমি জানি না কেন সেদিন সকালে আমি আমার বাবার প্রতি বিশেষ মমতা ও ভালোবাসা অনুভব করছিলাম।’
কন্যার অনুরোধ উপেক্ষা করে সেদিন হাবিব বলেছিলেন, ‘তোমার বাবা কাউকে ভয় পান না। আমার কিছু হলে সেটা হবে দেশের জন্য। তবুও ছাত্রদের ওপর অত্যাচার আর সহ্য করা যায় না।’
বাবার স্মৃতিচারণ করতে করতে আবেগাপ্লুত ফাতেমা বলেন, ‘তখন আমি ক্ষুণাক্ষরেও বুঝতে পারিনি আমার বাবার কাছ থেকে শোনা এটিই হবে শেষ কথা।’
#Tales_of_July
Post a Comment